Shibram Chakraborty Biography_Bengali
শিবরাম চক্রবর্ত্তী |
বাংলা
সাহিত্যে শিশু সাহিত্যিক হিসেবে শিবরাম চক্রবর্ত্তী সমধিক প্রসিদ্ধ। পাশাপাশি অম্লমধুর
টীকা-টিপ্পনী এবং গুরুগম্ভীর রচনাতেও তিনি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
১৯০৩
খ্রিস্টাব্দের ১৩ই ডিসেম্বর কলকাতায় মামার বাড়িতে শিবরাম চক্রবর্ত্তী জন্মগ্রহণ
করেন। তাঁর বাবা শিবপ্রসাদ চক্রবর্ত্তী ছিলেন আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ। শিবরামের পৈতৃক নিবাস ছিল মুর্শিদাবাদ
জেলার জরুরকবানা অঞ্চলে। জন্মসূত্রে তিনি
মালদহের চাঁচল রাজবাড়ির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কথার পিঠে কথার বোঝা
চাপিয়ে সরসপান রচনার ধারা বাংলা সাহিত্যে তিনিই প্রথম প্রচলন করেন। তাঁর প্রচলিত এই রীতি ‘শিবরামী স্টাইল’ নামে পরিচিত।
শিবরামের
কৈশোর কাল কাটে প্রথমে পাহাড়পুরে ও পরে চাঁচলে। ছোট থেকেই তাঁর ভবঘুরের মন ছিল। তাই কৈশোরেই তিনি
নি:সম্বল অবস্থায় গৃহত্যাগ করেন। বাইরের জগতের সংস্পর্শে তাঁর বিচিত্র ও নিত্য নতুন অভিজ্ঞতা হয়।
তিনি যে সকল রচনা করেছেন তা মূলত: তাঁর
বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। তাঁর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত প্রথম ফসল ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’। এই কাহিনীটি
চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে।
স্কুলে
পড়াকালীন তিনি স্বদেশী আন্দোলনে যোগদান করেন। সেই কারণে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে কারারুদ্ধ করে।
শিবরামের প্রথাগত
শিক্ষা বেশিদূর এগোয়নি। তবে, তিনি ঘরে ব’সে বিভিন্ন বিষয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেন।
স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত থাকার ফলে তিনি
দেশবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভ করেন। আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও তিনি
বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করতেন। ‘বিজ্ঞানী’ ও ‘ফরোয়ার্ড’ পত্রিকার সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত
ছিলেন। তিনি ‘যুগান্তর’ নামক
একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন।
বাংলা সাহিত্যে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে কবি
হিসেবে। তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘মানুষ’। পরে তিনি ‘বসুমতী’, ‘আনন্দবাজার’, ‘দেশ’ প্রভৃতি পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে অম্লমধুর
টীকা-টীপ্পনীর ফিচার লিখে অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
‘শিবরাম চকরবরতি’
এই নামে নিজেকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা ক’রে তিনি বেশ কিছু লিখেছেন। এইরকম নজির বাংলা সাহিত্যে সত্যিই বিরল।
বাংলা সাহিত্যের
অঙ্গনে তিনি সৃষ্টি করেন কৌতুক চরিত্র হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন নামক দুই ভাই ও বিনি। এই সিরিজের লেখাগুলির জন্য তিনি সাহিত্য
জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
হাসির ঘটনা ও হাসির কথা লেখার জন্য তিনি ‘হাসির রাজা’ নামে পরিচিতি লাভ করলেন।
কলকাতার মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের মেস
বাড়ির একটি ঘরেই শিবরাম জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেন। তিনি নিজেই বলতেন, ‘মুক্তারামের তক্তারামে শুক্তোরাম খেয়ে’ আরামে আছেন।
ব্যক্তিগত
জীবনেও শিবরাম খুব রসিক ছিলেন। অতি সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে তাঁর মেলামেশা ছিল। ফলে দিলখোলা, সদা হাস্যময়
শিবরামকে কলকাতার পথেঘাটে প্রায়ই দেখা যেত। তিনি শৌখিন ঝলমলে সুন্দর পাঞ্জাবী পরতেন। ভক্ত ও প্রিয়জনদের দেখতে পেলেই তাদের ডেকে পকেট
থেকে চকোলেট বার ক’রে খাওয়াতেন।
শিবরাম
চক্রবর্ত্তী প্রধানত: হাস্যরসাত্মক গল্প ও ফিচার রচনাকেই সাহিত্য রচনায় প্রধান
মাধ্যম করেছিলেন। তাঁর রচিত বইয়ের
সংখ্যা দেড়শতাধিক।
৬০ বছরের জীবনে তিনি
দু’হাতে লেখেন এবং ‘ষোড়শী’ নামক শরত্চন্দ্রের
দেনা-পাওনা উপন্যাসের নাট্যরূপ দেন।
তিনি একটি বিখ্যাত
নাটক লেখেন। নাটকটির নাম ‘যখন তারা কথা বলবে’।
তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘মস্কো বনাম পণ্ডিচেরী’ রাজনীতির উপর লেখা। তিনি একটি আত্মজীবনীও লেখেন ‘ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা’। এই গ্রন্থে সমসাময়িক বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতা, বহু চরিত্র ও ঘটনা স্থান পেয়েছে। সরস ভঙ্গিতে
তিনি এই সকল বিষয় বর্ণনা করেছেন।
জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি প্রচণ্ড আর্থিক
সংকটের মধ্যে পড়েন। তাঁর এই আর্থিক অস্বাচ্ছলতার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁর জন্য
মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করেছিল।
১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ২৮শে আগস্ট শিবরাম চক্রবর্ত্তী মুক্তারামের তক্তারাম ছেড়ে
পরলোক ধামে গমন করেন।
Hi, It was a great session with your blog, and was excellent content materails, keep it upHere My Website
ReplyDeleteThanks for your comment...!!!
DeleteVery nice 👌👍👏
ReplyDeleteGreat Article.
ReplyDeleteTo get Bangla pdf visit https://boierpathshala.blogspot.com/